বাগমারায় যুবলীগ নেতা সোহেল রানা মাদক সহ আটক


নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশের সময় : ১৪/০৪/২০২৩, ১০:৪০ অপরাহ্ণ /
বাগমারায় যুবলীগ নেতা সোহেল রানা মাদক সহ আটক

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নাপিত সোহেল রানা কে রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশের অভিযানে ৫০ গ্রাম হিরোইন ও ৬ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক করা হয়েছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার, এ বি এম মাসুদ হোসেন, বিপিএম (বার) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সনাতন চক্রবর্তীর নির্দেশনায় ওসি ডিবি আব্দুল হাই, পিপিএম এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আতিকুর রেজা সরকার সহ সঙ্গীয় ফোর্স এর সহায়তায় শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে বাগমারা থানাধীন গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেউখালী গ্রামস্থ ঘুসাতলা ব্রীজ এর উপর মাদকদ্রব্য হেরোইন ও ফেন্সিডিল নিজেদের দখলে রেখে ক্রেতার নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করাকালে সোহেল কে হাতে নাতে মাদক সহ আটক করা হয়।

আটক সোহেল রানা (৩৫) বাগমারা উপজেলার চেউখালী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) গ্রাম হেরোইন ও ৬ (ছয়) বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার সহ আটক করা হয় সোহেল কে কিন্তুু ঘটনাস্থল থেকে একজন পালিয়ে যায় । এ সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রেফতার ও পলাতক আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন।

এই ঘটনার আগে গত বছর ১৪ ই সেপ্টেম্বর বাগমারা থানার পুলিশের তাহেরপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্র গোপন সংবাদে জানতে পারেন, মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুইজন মাদক কারবারি গোয়ারকান্দি ইউনিয়নের রামরামা এলাকায় মাদক বিক্রি করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিলালুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা এলাকায় অভিযানে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারি ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা নাপিত সোহেল রানা সটকে পড়লেও নাসির উদ্দীন নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ১৯ বোতল ফেন্সিডিল ও ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।

নাসির উদ্দিনকে সেই দিন বাগমারা থানায় সোপর্দ করলেও পালিয়ে থাকে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী নাপিত সোহেল রানা। দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে বাহিরে আসেন। তবে গোপন সংবাদ এর ভিত্তিতে আমরা জানতে পারলাম, তাকে জামিন করাতে সহায়তা করেছেন ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা। দলের নেতাদের ছত্র ছায়ায় ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন মাদকের গডফাদার। তিনি মূলত ফেন্সিডিল, ইয়াবা বিক্রি করলেও সবচাইতে ভয়ানক মাদক হিরোইনের মত মাদক তিনি এখন বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বলেন, এ ধরনের নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ সরকারের দলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তবে যারা এদের আশ্রয়-ও প্রশ্রয় দিয়েছেন তাদের বিচার হওয়া দরকার। কারণ আগেও যখন যুবলীগ নেতা সোহেল রানার মাদক বিক্রয়ের বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউ ছাপা হয়েছিল ঠিক তখন তদন্ত করে এর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। তাই তিনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন মাদকের গডফাদার।

এলাকাবাসীরা জানান, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মাদক সরবরাহ করে আসছেন সোহেল রানা। তারা গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন, তাহেরপুর পৌরসভা, নলডাঙ্গা, নাটোর সহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মাদক দ্রব্য সরবরাহ করে আসছেন। মাদক কারবারিদের ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে পারে না। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে নানা ভাবে হেনেস্তা ও হয়রানির শিকার হতে হয়। যার কারণে এলাকার লোকজন তাদের ভয়ে মুখ খুলে না। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা কেউ আইনের আওতায় আনার জোর দাবি স্থানীয়দের।

পত্রিকা একাত্তর/ রবিউল