ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ইটেও টাকা চায়। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে। ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আহসান হাবিব। শুধু তিনি নন আরো হাজারো আহসানকে জমি রেজিস্ট্রি করতে বিপাকে পড়তে হয়।
পদে পদে ঘুষ আর অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে প্রতিটি দলিলে। এ ছাড়া অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহে হয়রানির শেষ নেই। উপায় না পেয়ে মাসের পর মাস ধরনা দিচ্ছেন রেজিস্ট্রি অফিসে। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার।
ঠাকুরগাঁও সদরের সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিমাসে এক হাজার থেকে এগার’শ দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়।
সরজমিনে গেলে, অতিরিক্ত টাকা দিয়েও জমির দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে মাসের পর মাস ঠাকুরগাঁও সদর রেজিস্ট্রি অফিসে ধরনা দিয়েও কাগজ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইব্রাহিম আলী নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি।
জমি ক্রয়ের পর রেজিস্ট্রি করতে ক্রেতাদের শুরুতেই দলিল লেখকের কাছে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত গুনতে হয় দুই হাজার টাকা। যার কোনো হিসাব নেই। এরপর দলিল সম্পাদনে রেজিস্ট্রি অফিসের টেবিলে টেবিলেও দিতে হয় ঘুষ। নিজে বা দালালদের মাধ্যমে ঘুষ না দিলে সময়মতো কাগজপত্র না পাওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের।
রেজিস্ট্রি করতে আসা ব্যাক্তিরা জানান, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি হয়রানির সীমা নেই। উপায় নেই, তবুও কাগজ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তবে প্রশাসনের বিষয়গুলো দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
প্রতিটি দলিল লেখনীতে সরকার নির্ধারণ ফির বাইরে অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে তা পারিশ্রমিক বলে দাবি করেন জেলা সদরের দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
তবে সদরের সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রশিদ বলেন, জমি রেজিস্ট্রির কাগজপত্র পেতে অতিরিক্ত টাকা লাগে না। এমন কিছু হয়ে থাকলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পত্রিকা একাত্তর/ আনোয়ার হোসেন
আপনার মতামত লিখুন :