“রাতে মশা দিনে মাছি এই নিয়ে ঝিনেদায় আছি”


জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ প্রকাশের সময় : ০৪/০৪/২০২৩, ২:৩১ অপরাহ্ণ /
“রাতে মশা দিনে মাছি এই নিয়ে ঝিনেদায় আছি”

ঝিনাইদহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। বাসাবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস সব জায়গায় মশার উপদ্রব। কয়েল কিংবা স্প্রে সব কিছুই মশার কাছে হার মানছে। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করেও রেহাই নেই।

এমনকি রমজানে ইফতার, নামাজ ও সেহেরী শান্তিতে করতে পারছেন না মশার উপদ্রবে। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নবগঙ্গা খাল, পাড়া মহল্লার ড্রেন, খানা গর্তে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ পৌরবাসীর। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের দখল ও দূষণে পানি প্রবাহের খালটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এখানেই শহরের সমস্ত ময়লা পানি ড্রেনের মাধ্যেমে এসে পড়ছে।

এছাড়া বিভিন্ন সময় ময়লা আবর্জনা ফেলে পৌরবাসী। ফলে পানিতে ময়লা জমে প্রচুর মশার লাভা জন্ম নিচ্ছে। আর পৌরসভাও নিয়মিত মশা নিধন করছে না। ফলে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব। পৌরবাসীর অভিযোগ, নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহনের পর কয়েকদিন বিভিন্ন এলাকার ড্রেন পরিস্কার ও মশা নিধন ওষুধ ছিটিয়েছিল। তার পর থেকে পৌরসভার এ ধরনের কোন কাজ আর চোখে পড়েনি। ফলে মশা বাড়ছেই। সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকায় অধিকাংশ পাড়া মহল্লাতে আছে ছোট ছোট ডোবা নালা ও বদ্ধ ড্রেন।

এসব ডোবা নালার ওপর দিয়ে ঝাকে ঝাকে মশা উড়ছে। পৌরসভার বাসিন্ধা সাবিব আহম্মেদ বলেন, দিন কি বা রাত ঘরে বাইরে সব সময় মশার উপদ্রব বেড়েছে। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখলেও মশার হাত থেকে রেহায় পাওয়া যাচ্ছে না। এবছর যে ভাবে মশার যন্ত্রনা বেড়েছে এর আগে কখনও এমনটি দেখা যায়নি। কয়েল, ধোয়া কিছু দিয়েই কিছু হচ্ছে না। তিনি বলেন, রাতে মশা আর দিনে মাছির উৎপাত নিয়েই আমরা বসবাস করছি। হামদহ ট্যাংকি পাড়ার রুয়ের পারভেজ বলেন, শুধু কাগজে কলমে আমাদের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। নিয়মতি ড্রেন পরিষ্কার না করা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে মশার যন্ত্রনা বেড়েছে।

পৌরসভার মশা নিধন কার্যক্রমের অভাবে মশা চরম আকার ধারণ করেছে। নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশা নিধন কার্যক্রম করা হলেও বাকিগুলোতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। রোকেয়া খাতুন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, শুধু রাতে না, দিনের বেলায় মশারি ব্যবহার করতে হচ্ছে। চলছে রমজান মাস, মশার যন্ত্রনায় নামাজ, ইফতার, সেহেরী কিছুই শান্তিতে করতে পারছিনা। নতুন মেয়র ভোটের আগে অনেক কিছুই করবে বলেছিলেন। তিনি এখন মশা মারতেই কাবু। মহিলা কলেজ পাড়ার বাসিন্ধা মারুফ আহম্মেদ বলেন, কিছু দিন আগে দেখলাম পৌরসভা কয়েকদিন ধরে শহরে মশা নিধনের ওষুধু ছিটাতে। ভেবেছিলাম পাড়া মহল্লাতেও আসবে কিন্তু তাদের দেখা আর পাওয়া যায় নি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র মোঃ কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল বলেন, মশা নিধনের অভিযান বন্ধ হয়নি। একবারে সবকিছু করা যায় না। আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করছি। প্রতিষ্ঠানে মশা নিধনের মেশিনও ছিল না। আমি চারটি মেশিনের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, যে সব এলাকায় মশা বেশি উৎপাত করছে, আমাকে জানালে আমি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

পত্রিকা একাত্তর/ মাহফুজুর রহমান