সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপির ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ


উপজেলা প্রতিনিধি, ডোমার প্রকাশের সময় : ৩১/১০/২০২২, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ / ৩৫৭
সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপির ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নীলফামারী-২ (সদর) আসনের চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপির ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ।

আসাদুজ্জামান নূর ১৯৪৬ সালের ৩১শে অক্টোবর নীলফামারী জেলায় আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী ও আমিনা বেগম দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নীলফামারী কলেজ ছাত্র সংসদের (নীকসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন নূর।

ছাত্রজীবনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তর্জনীর দাপটে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৯৭২ সালে আসাদুজ্জামান নূর সাপ্তাহিক চিত্রালীতে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। একই বছরে ‘নাগরিক’ নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত হন তিনি। এই দলের হয়ে ১৫টি নাটকে ছয় শতাধিক বার অভিনয় করেছেন। তার নির্দেশনায় ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এযাবৎ শতাধিক টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।

টেলিভিশন জগতে আসাদুজ্জামান নূরের উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫), অয়োময় (১৯৮৮), কোথাও কেউ নেই (১৯৯০), আজ রবিবার (১৯৯৮) ও সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)।

কর্মজীবনে ১৯৭৪ সালে রাশিয়া দূতাবাসের (তৎকালীন সোভিয়েত) প্রেস রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এরপর ১৯৮০ সালে ইস্ট এশিয়াটিক এডভারটাইজমেন্ট লিমিটেডের সাধারণ ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি।

নব্বইয়ের দশকে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করে দেশব্যাপী তুমূল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তার অভিনয়ে দর্শকদের এতটাই আকর্ষিত করেছেন যে, নাটকে তার ফাঁসি না দেওয়ার দাবীতে পরিচালক হুমায়ুন আহমেদের বাড়ি ঘেরাও সহ বিভিন্ন আন্দোলন অব্ধি হয়েছিল।

এছাড়া দেশ টিভিতে প্রচারিত “কে হতে চায় কোটিপতি” অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্বও পালন করেন নূর। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির ব্যবস্থাপক হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্বপালন করেছিলেন ৷

দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পর নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেরর দাবীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সাথে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন।

আসাদুজ্জামান নূর ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবনে ডা. শাহিন আখতারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আসাদুজ্জামান নূর। যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাদের এক পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পুত্র সুদীপ্ত ও কন্যা সুপ্রভা তাসনীম।

‘বাকের ভাই’ খ্যাত নীলফামারীর উজ্জ্বল নক্ষত্র, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ এবং নীলফামারীর গণমানুষের আস্থাভাজন অভিভাবক জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর এমপির জন্মদিনে পত্রিকা একাত্তরের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

পত্রিকা একাত্তর/রিশাদ