হলুদের যত উপকারিতা

সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি

১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ৩ years আগে

হলুদের যত উপকারিতা
হলুদ

হলুদ শুধুমাত্র রান্নার একটি মশলা হিসেবেই নয়, প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রে এটির ব্যবহার হচ্ছে বহু বছর ধরে। স্বাস্থ্যকর ভেষজ হলুদ আবার ‘ঔষধি ভেষজ’ নামেও পরিচিত। আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধে হলুদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

হলুদে আছে অ্যান্টি–ইনফ্লামেশন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও কার্কুমিন উপাদান আছে, যা আমাদের দেহের অনেক সমস্যার সমাধান করে থাকে, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন এমন সব রোগের ক্ষেত্রে।

হলুদের উপকারিতা

ত্বকের যত্নেঃ প্রতিদিন সকালে উঠে একটুকরো কাঁচা হলুদ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ত্বক মসৃণ করতেও সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ খেলে দেহের ভেতর এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই সৃষ্টি হয় না।

আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতেঃ হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে যা আর্থ্রাইটিসের কবল থেকে রক্ষা করে। হাড়ের কোষকে সুরক্ষা ও দৃঢ়তা প্রদান করে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নড়াচড়ার অসুবিধা দূর করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ হলুদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রক্তকণিকাকে নিরাপদ রাখে। ফলে স্তন ক্যানসার, পাকস্থলী, কোলন ও ত্বকের ক্যান্সার তৈরির কোন সম্ভাবনাই থাকে না।

ক্ষত শুকাতেঃ কাঁচা হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন এবং আরও নানা ধরনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যে কোনো ধরনের ক্ষতের যন্ত্রণা কমিয়ে শুকাতে সহায়তা করে। এটা আঘাত সারাতেও দারুণভাবে কাজ করে। এ কারণেই চিকিৎসকগণ ছোট বাচ্চাদের নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া ক্ষতস্থানে অল্প পরিমাণে হলুদ বেঁটে লাগিয়ে দিলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

পিরিয়ডের সমস্যা দূরীকরণেঃ যাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা রয়েছে তাদের হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে হলুদের কারমিউমিন ভূমিকা রাখে। এই উপাদান পিরিয়ডের আগে ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে থাকে।

মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা রোধকরনেঃ হলুদে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান পার্কিনসনস, আলঝেইমার, টিস্যুর স্থবিরতার মতো অসুস্থতা রোধে সক্ষম। এটি আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুর তথ্য আদান-প্রদানের পরিমাণ বাড়ায়। এছাড়াও হতাশার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

যকৃৎকে সুরক্ষা প্রদানেঃ হলুদ যকৃতের নানান রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। লিভারের বহুবৃদ্ধি, হেপাটাইটিস, সিরোসিস, গলব্লাডারের মতো সমস্যা তৈরিতে বাধা দেয়।

মাথা যন্ত্রণায়ঃ এখন থেকে মাথা যন্ত্রণা হলেই এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমে গেছে। হলুদে থাকা কার্কিউমিন এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আপনার মাথা যন্ত্রণা লাঘব করবে।

হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ একাধিক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণের পরিমান বেড়ে যায়। ফলে বদহজমের আশঙ্কা থাকে না। গ্যাস্টিক এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যাও কমে যায়।

পত্রিকা একাত্তর/ অপূর্ব চক্রবর্তী

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news