২৮ এপ্রিল ২৩ শুক্রবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালস্থ মসজিদের সামনে, সরাসরি বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময় কালে মানবিক পুলিশ শওকত স্বশরীরে উপস্থিত থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বেওয়ারিশ ফাউন্ডেশনের মিডিয়া গণসংযোগ বিষয়ক গিয়াস উদ্দিন, বেওয়ারিশ ফাউন্ডেশনের তৈয়ব আলী, এলিট রক্তদান ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা জিয়াবুল হোসেন তারেক, চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সংগঠনের মানবিক কাজে নিয়োজিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও স্বেচ্ছাসেবকগন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল তার চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা।শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লাইভে এসে কথা বলেছেন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, আমি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যহতির আবেদন করেছিলাম। কুমিল্লায় পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যালয়ে গিয়েও অব্যহতির আবেদন করি। এটির প্রক্রিয়া শেষ হতে অনেক সময় লাগে। কিছু সময় দেরি হয়ে গেছে। ওই সময়টাতেই আসলে অব্যহতির নোটিশটা চলে আসে। আসলে দেশদ্রোহী কোনো কিছুই আমি করিনি।
তিনি আরো বলেন, গতানুগতিক নিয়মেই আমি দরখাস্ত করেছি। এটি নিয়ে ভিন্ন ধরনের কথা বলার সুযোগ নেই। আমার অব্যহতির বিষয়টা গরহাজিরের কারণেই তারা করেছে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত যে- বিষয়টা আরো একটু সুন্দর হতে পারতো। আমরা যেভাবে বিদায় নেই; সেভাবেও হতে পারতো। হয়তো অফিসিয়াল জটিলতার কারণে সেটা হয়নি। তারপরও যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- আমি সে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। আজীবন আমি বাংলাদেশ পুলিশকে ভালোবেসে যাবো।
শওকত হোসেন বলেন আমি ২০১০ সাল থেকে মানবিক কাজের সঙ্গে জড়িত। এই পথ চলাটা অনেক দীর্ঘ। এই পথ চলার পরিসর অনেক বড় হয়েছে। আমার পাশে এখন অনেক মানুষ কাজ করে। এই কাজ আমি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।’ তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে মানুষ আমাদের মানবিক মানুষ হিসেবে জানুক। আমরা এটিই চাই। বাংলাদেশকে মানবিক কান্ট্রি হিসেবে যেন অন্যান্য দেশ শনাক্ত করে- আমাদের ভিশন এটাই। আমরা আমাদের মানবিক বাংলাদেশ নিয়ে থাকতে চাই।
পুলিশে কাজ করা নিয়ে শওকত হোসেন বলেন, আমি নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য মনে করি। পুলিশ বাহিনীর মতো একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীতে আমি কাজ করে আসছিলাম দীর্ঘ ১৮ বছর। বর্ণাঢ্য এই জীবনে আমি পুলিশ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। এই জন্য আমি আজীবন কৃতজ্ঞ। যতো দিন বেঁচে থাকব শ্রদ্ধার জায়গা থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে স্মরণ করবো।’ পুলিশকে নিয়ে বিতর্ক না ছড়ানোর জন্যও আহ্বান জানান তিনি।
গরহাজিরের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, আমি গরহাজির ছিলাম। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে আমি বসে থাকেনি। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলাম। মানবিক কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছি। আমি তখন ঘুমাই নাই, বিদেশে ভ্রমণেও যায়নি।
এদিকে কনস্টেবল শওকত হোসেনের বরখাস্তের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। পরিশেষে মানবিক শওকত দেশবাসী ও প্রবাসী সকল ভাই-বোন ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি দোয়া ও ভালোবাসা ছেয়েছেন। আজীবন মানবতার কল্যাণে মানবিক কাজে নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে কনস্টেবল মো. শওকত হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার আদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন
আপনার মতামত লিখুন :