ঈদে হাট কাঁপাতে আসছে ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৪ মে, ২০২৫, ১ week আগে

ঈদে হাট কাঁপাতে আসছে ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’ নামের দুটি বিশাল আকৃতির ষাঁড়। স্বাস্থ্যবান গঠন ও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত হওয়ায় এ ষাঁড় দুটির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় হাট-বাজার থেকে শুরু করে অনলাইন মাধ্যমেও।

এই দুই ষাঁড় পালন করছেন নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ‘এম এইচ বি এম এগ্রো’ খামারের কর্ণধার মেহেদী হাসান বাবু মিয়াজী। তিনি জানান, পশুগুলো কোনো কৃত্রিম হরমোন বা ওষুধ ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে এবং প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়ে লালন করা হয়েছে। গরুগুলোর প্রতি সন্তানের মতো ভালোবাসা রয়েছে, তাই খামারে প্রতিটি গরুর নিবিড় পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানবিক পদ্ধতিতে যত্ন নেওয়া হয়।

লাল রঙের ‘লালু সর্দার’ হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়, যার ওজন প্রায় ১২ থেকে ১৩ মণ। গত কোরবানিতে হাটে উঠলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বিক্রি হয়নি, এবার এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অপরদিকে কালো রঙের ‘কালিয়া’ ষাঁড়টির ওজন প্রায় ১৪ থেকে ১৫ মণ এবং এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মালিক বাবু মিয়াজী জানান, লাভের জন্য আকাশছোঁয়া দাম চাওয়া হবে না, বরং ফিক্সড দাম রাখা হয়েছে। মতলব উত্তর উপজেলার ভেতরে কেউ কেনালে বাড়ি পর্যন্ত ফ্রি ডেলিভারি দেওয়া হবে।

‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’ ছাড়াও খামারে আরও দুটি বিশাল গরু রয়েছে—‘সুন্দর আলী’ ও ‘কালো বীর’, যেগুলোর দৈহিক গঠন ও স্বাস্থ্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এসব গরুর ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

খামারী বাবু মিয়াজী জানান, তার পূর্বপুরুষরাও গরু মোটাতাজাকরণে যুক্ত ছিলেন এবং তিনি নিজে ২০০৭ সাল থেকে এই পেশায় আছেন। ব্যবসায় লাভ হয়েছে যেমন, কিছু বছর লোকসানও হয়েছে। তবে এবারের ঈদে তার খামারের গরুগুলো খুবই চমৎকার এবং তিনি আশাবাদী ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবুল মুফতী বলেন, প্রতিবার কোরবানির আগে বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখেন, কিন্তু এবার ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’ দেখে সত্যিই অবাক হয়েছেন। এমন গঠন আর পরিচর্যা খুব কমই দেখেছেন, দামটাও যথাযথ মনে হয়েছে।

আরেক দর্শনার্থী গজরা ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রামের ইসমাইল খান টিটু জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে খামারে এসেছেন। গরুগুলো একেবারেই ভিন্ন রকম, বিশেষ করে কোনো ধরনের হরমোন ছাড়াই গরুগুলো বড় করা হয়েছে বলে তাকে সবচেয়ে ভালো লেগেছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ‘এম এইচ বি এম এগ্রো’ খামারের এই উদ্যোগ শুধু পশুপালনে নয়, সচেতন ও মানবিক কোরবানির বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছে। গরু যেন শুধুমাত্র ব্যবসার পণ্য নয়, সঠিক পদ্ধতিতে পালন করলে তা হতে পারে গর্বের প্রতীক।

— চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি/পত্রিকা একাত্তর

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news