ভোলা ০৪ আসন চরফ্যাশন-মনপুরার বিএনপির ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও নেতা কর্মীরা দুই ধারায় বিভক্ত থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়ছে দলটি। এখানে দলে নেই কোন চেইন অব কমান্ড। যার যত ক্ষমতা আছে সে ততটুকই প্রয়োগ করছে অধীনস্ত কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর।
কমিটি বিলুপ্ত আর পাল্টা কমিটি গঠন এই চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে দলটি। বিএনপির উপজেলা কমিটির অঙ্গ সংগঠন যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল , ছাত্রদলে চলছে হ য ব র ল অবস্থা।পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন, কমিটি বিলুপ্ত ও পদ থেকে বহিষ্কারে গ্রুপিং এখন স্পষ্ট।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহি কমিটির সদস্য ও চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দীন আলম ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন।দু'জনই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির টিকেটে লড়তে চান। নাজিম উদ্দীন আলম এ আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক সাংসদ হওয়ায় স্থানীয় কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিএনপি সমর্থকদের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে তার প্রতি। বিগত দিনে নেতাকর্মীদের খোঁজ রাখায় এখনও অনেক কর্মীর আস্থা রয়েছে নাজিম উদ্দীন আলমের প্রতি। অন্যদিকে নুরুল ইসলাম নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ভোলা জেলা যুবদলের কমিটি গঠনে তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। এ প্রভাব চরফ্যাশন বিএনপির উপজেলা থেকে ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড কমিটি যে কোন অঙ্গ সংগঠন বিশেষ করে যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলের কমিটি গঠনে ব্যাপকভাবে বিস্তার করছে। এ সুযোগে অতীতে দলীয় কার্যক্রমে নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীরা তার গ্রুপে ভীড়ে কমিটিতে পদ পদবী পাওয়ার জন্য লবিং শুরু করে ।এতে করে তারা পদ পদবীও পায়। এমন অভিমত রাজনীতি সচেতন মহলের।
যার ফলে অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠনে অতীতে দলের জন্য নিবেদিত নেতাকর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে। কমিটিতে হয়ে তারা যায় অপাংক্তেয়।রাজনীতিতে নতুন হয়েও নয়ন গ্রুপে সংশ্লিষ্ট থাকায় কমিটিতে স্থান পাওয়া মামুলি ব্যাপার হয়ে ওঠে।যার দরুণ রাজনীতি সচেতন অনেক কর্মীও এখন তার গ্রুপে ভিড় করছে ।ফলে চরফ্যাশনের বিএনপি রাজনীতে নুরুল ইসলাম নয়নের অবস্থান দৃশ্যমান হচ্ছে।
অন্যদিকে মূলধারার অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা সাবেক সাংসদ নাজিম উদ্দীন আলমের অনুসারী হয়ে মাঝে বিভিন্ন প্রোগ্রাম পালন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। তাদের অভিমত সাধারণ বিএনপি সমর্থকরা নাজিম উদ্দীম আলমকেই তাদের নেতা হিসেবে চান।
দু'গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় তারা দলীয় দু'একটা প্রোগ্রাম পালন করলেও তা ভিন্ন ভিন্নভাবে পালন করে। শরীফপাড়াস্থ দলীয় অফিসে নুরুল ইসলাম নয়ন গ্রুপ নাজিমউদ্দীন আলম গ্রুপ তার বিআডিবির বাসায় পালন করে। এমতাবস্থায় সাধারণ কর্মীরা পেন্ডুলামের মত দোলাচালে আছে । কোন গ্রুপে যাবে ? -এ দোলাচালে তারা দলীয় প্রোগ্রাম পালনে নিষ্ক্রিয় রয়েছে।
নুরুল ইসলাম নয়ন নিজ কমিটির লোক দিয়ে নিজের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করলেও রাজনীতি বিশ্লেষকদের অভিমত নয়ন স্থানীয় সন্তান হলেও চরফ্যাশনের বিএনপির রাজনীতিতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হলে আগে সাধারণ মানুষের কাতারে আসতে হবে। সাধারণ মানুষের নার্ভ কুঝে পদক্ষেপ নিতে হবে।
নাজিম উদ্দীন আলম এ আসন থেকে তিনবারের নির্বাচিত সাংসদ হওয়ায় রাজনীতিতে অনেক অভিজ্ঞ তিনি । এছাড়া দলের জন্য অনেক ত্যাগ রয়েছে তার।ঢাকসুর এজিএস থাকাকালীন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাসের অংশ হয়ে আছেন।
সাধারণ কর্মীসমর্থকরা অনুরোধ গ্রুপিং বাদ দিয়ে সবাই এক কাতারে এসে দলের অবস্থানকে শক্তিশালী করার।
দলে গ্রুপিং সাংগঠনিক স্থবিরতা সম্পর্কে জানতে চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়ার সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায় নি।
পত্রিকা একাত্তর/মো.নুর উল্লাহ আরিফ