বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় মোরেলগঞ্জসহ বাগেরহাটের ৯ টি উপজেলায় প্রস্তুতি মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১১মে) দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জেলার ৯টি উপজেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় , ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় বাগেরহাটে ৮৪টি মেডিকেল টিম, ১হাজার ৯২০ জন সিপিপি-র সদস্য, ৫০০ জন রেড ক্রিসেন্ট সদস্য, রোভার, বিএনসিসি, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, এনজিও, প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম গঠন ও প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং ৪৪৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও সভায় জানানো হয়। যেখানে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
এছাড়া ত্রাণ প্রদানের জন্য ৫২২.৮০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়ে ফসলের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং সকল উপজেলা কৃষি অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়াও পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, বিদ্যুৎ, কোস্টগার্ড-কে সক্রিয় থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শুকনা খাবার যেমন চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট, গুঁড়াদুধ, মোমবাতি, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও উপকরণ এবং খাবার স্যালাইন মজুত রাখার জন্য সিভিল সার্জন, নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য এবং ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মসজিদে ইমামদের মাধ্যমে মাইকিং করে ঝড়ের আগে, ঝড়ের সময় এবং ঝড়ের পরে করণীয় ও উপকূলবর্তী প্রতিটি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোলরুম খোলা হচ্ছে। ঝড়ের আগে ধান কাটা, মাছ ধরা এবং মাছের ঘেরের পাড়, নীচু জমি নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যথাসময়ে গবাদিপশু আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক এবং খামারিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আজিজুর রহমানের বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ৪৪৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয় ।
এদিকে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বৃহস্পতিবার (১১মে) দুপুরে প্রস্তুতি মূলক সভা করা হয়।সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এ্যাড. শাহ-ই আলম বাচ্চু, থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সাইদুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা খানম।
অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, বাগেরহাটের ৯ টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ উপজেলা আমাদের মোরেলগঞ্জ, তাই সবার আগে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ঘূর্নিঝড়ে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, আমরা বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিস, এনজিও, নৌ পুলিশ, এনজিও প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দসহ সকলকে অবগত করা করেছি এবং উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নের প্রায় ২,৯৪,৫৭৬ জন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে সরকারী বেসরকারী সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তাছাড়াও শুকনা খাবার যেমন চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট, গুঁড়াদুধ, মোমবাতি, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও উপকরণ এবং খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত মজুত রাখা হয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ নাজমুল
আপনার মতামত লিখুন :