বিয়ের দাবীতে শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বাড়ীতে পাঁচ দিন ধরে ছাত্রীর অনশন

স্টাফ রিপোর্টার | ঠাকুরগাঁও

স্টাফ রিপোর্টার | ঠাকুরগাঁও

৭ মার্চ, ২০২২, ৩ years আগে

বিয়ের দাবীতে  শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বাড়ীতে পাঁচ দিন ধরে ছাত্রীর অনশন

গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) থেকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবীতে শিক্ষকের বাড়ীতে অনশন শুরু করেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অন্যদিকে গত শনিবারে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে রাজপথে নামেন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে পাঁচ দিন ধরে অনশন করছেন ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী।

আজ (০৭ মার্চ) সোমবার উপজেলার পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। এছাড়াও তাদের সহপাঠীর সাথে যে অন্যায় অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পযর্ন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষনা দেন তারা।

অনশনরত ওই শিক্ষার্থী জানান, কম্পিউটার অপারেটর তৌহিদুলের সাথে আমার তিন বছরের প্রেমের সর্ম্পক। তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হয়েছেন। এখন তিনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন। অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য পাঁচ দিন ধরে তৌহিদুলের বাড়ীতে অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাকে বিয়ে না করলে আমি এ বাসা থেকে যাবো না।

বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার হওয়ার আশ্বাস দেন রাণীশংকৈল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা৷ শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষ করে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ইউএনও বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মুফসিরাত জাহান বলেন,আমাদের সহপাঠীর সাথে যে অন্যায় অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পযর্ন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আজ ধরে ৫ দিন হয়ে গেলো এখনো কোন সমাধান হয়নি।

আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, চরিত্রহীন শিক্ষকের কঠিন শাস্তি চাই। যাতে তার শাস্তি দেখে আর কোন শিক্ষক ভুল করেও শিক্ষার্থীদের দিকে কু-নজরে না তাকায়। লম্পট তৌহিদুল গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা৷

অভিযুক্ত কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির ঢাকা পোষ্টকে বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকদের সাথে বসেছি। যতদিন না এর সমাধান হচ্ছে সে প্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেননা৷ শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর বাবা মামলা দায়ের করেছেন৷ সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পত্রিকা একাত্তর/ আব্দুল্লাহ আল সুমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news