অশান্ত হয়ে উঠছে নড়াইলের বাশগ্রাম!

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি

৩০ মার্চ, ২০২২, ৩ years আগে

অশান্ত হয়ে উঠছে নড়াইলের বাশগ্রাম!

অবারো অশান্ত হয়ে উঠছে নড়াইলের বাশগ্রাম। সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে নড়াইল সদর উপজেলার বাসগ্রামের কয়েকটি পরিবার। চাদাবাজি, লুটপাট,ঘের দখল, গাছকাটা, হামলাসহ নানা অপরাধমুলক তৎপরতায় তাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব অপরাধমুলক তৎপরতা বন্ধ করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে মিরাজ মোল্যা ও নাছির উদ্দীন রাজু পুলিশ সুপার ও সদর থানায় আলাদাভাবে দুইটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসগ্রামের শহীদুল মোল্লা, নজির মোল্যা, আজিজার মোল্যা, অলিয়ার মোল্যা এবং জাহিদ মোল্যা আপন ভাই। এর মধ্যে আজিজার মোল্যা আমেরিকা প্রবাসী। পৈত্রিক সম্পত্তিরভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ভাইদের মধৌ দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব সংঘাত চলে আসছে। বংশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে নিজেদের মধ্যে অনেকবার আপোষ মীমাংশার চেষ্টা চলে।

এক পর্য়ায়ে শহীদুল মোল্যা, আজিজার মোল্যা এবং নজির মোল্যা সম্পত্তি ভাগ ভাটোয়ারার বিষয়টি মেনে নেন। কিন্তু অপর দুই ভাই অলিয়ার মোল্যা ও জাহিদ মোল্যা মেনে নিতে পারেন না।আলিয়ার মোল্যা ও জাহিদ মোল্যা তিন ভাইকে জব্দ করতে এলাকার কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেন।

সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত ওই তিন ভাইয়ের পরিবারের কাছে চাদাবাজি,ঘের থেকে মাছ মেরে নেওয়া, হুমকী-ধামকীসহ নানা অত্যাচার চালিয়ে আসছে। ভয়ে তিন ভাইয়ের পরিবারের লোকজন বাইরে বের হতে পারে না। স্কুলে যেতে পারছে না ছেলে মেয়েরা।

গ্রামের কয়েকজন মুরুব্বী জানান,মৃত কালা মোল্লার ছেলে বাচ্চু মোল্যা(৪৫), নান্নু মোল্যা(৪০), কুটিমিয়া বিশ্বাসের ছেলে মতিয়ার বিশ্বাস(৪৮)(স্থানীয় বাস কাউন্টারের ষ্টাটার), আকবর বিশ্বাস (৪০), ইপিয়ার বিশ্বাস(৩৫), ইকবাল বিশ্বাস(৫২), মৃত হামিদ মোল্লার ছেলে লাভলু মোল্যা(৪০), রিপন মোল্যা(৪৫), মৃত মকিম মোল্যার ছেলে ইব্রাহিম মোল্যা(৫৫),আমজাদ মোল্যা(৫০), মৃত ইদ্রিস মোল্যার ছেলে আলমগীর মোল্যাসহ বেশ কয়েজনের একটি গ্রুপ এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নষ্টসহ মারামারি গোলমাল করে থাকে। এরা এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করেছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, নান্নু মোল্যা,বাচ্চু মোল্যা, মতিয়ার বিশ্বাস, ইকবাল বিশ্বাসসহ অনেকেই ২০০১ সালের ১৪ জুলাই কলিমন বাসগ্রামের মো.রবিউল মোল্লা হত্যা মামলার অসামি। নিম্ন অদালতে এদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ হয়।

বর্তমানে উচ্চাদালতের আদেশে জামিনে আছেন। এছাড়া অন্যদের বেশিরভাগই রহিমা বেগম অ্যাসিড মামলার আসামি। জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবারো এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

নজির মোল্যার ছেলে নাছির উদ্দীন বলেন, আমার ছোট ভাই বেনু মোল্যাকে মেরেফেলার ভয়ে সে বাড়ি ছাড়া। আমাদের পরিবারের কেউ স্থানীয় বাজারে যেতে পারে না। ছেলে মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে পারে না। আমরা এলাকার শান্তি চাই। যে কারণে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বাচ্চু মোল্যাকে একাধিকবার ফোন (০১৭৫৪-৬৫৬৮৫৪) দিয়ে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে মতিয়ার বিশ্বাস বলেন, এমনিতেই আমাদের মাথার ওপর হত্যা মামলা ঝুলে আছে। এরপরে কি কেউ আর কোন গোলমালের সঙ্গে থাকতে পারে? যারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে সবই মিথ্যা। তিনি বলেন,আপনারাই খোজ নিয়ে দেখেন ওই পরিবারের লোকজন কত খারাপ প্রকৃতির।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শওকত কবীর বলেন, সদর উপজেলার বাসগ্রাম থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাসগ্রাম ইউনিয়নে বিট পুলিশ রয়েছে।

তাদের তথ্যমতে ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে কোন পরিবার জিম্মি হয়ে আছে এমন কোন ঘটনাই নেই। তিনি বলেন, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রয়েছে।

পত্রিকা একাত্তর/ হাফিজুল নিলু

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news