সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মোল্লাহাট বাজারের পুরাতন ফেরীঘাট এর পশ্চিম পাশে মধুমতি নদী তীরবর্তী পাকারাস্তা সহ বেশ খানিকটা এলাকা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তীব্র হুমকিতে রয়েছে দোকান পাট ও মিল কারখানা। এসময় এলাকাবাসী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আশপাঁশে কোনরকমভাবে বাঁশ/কাঠ দিয়ে ভাঙ্গন রক্ষায়। কিন্তু তাতে শেষরক্ষা হচ্ছেনা। দ্রুত এই নদী ভাঙ্গন ঠেকানো না গেলে হয়তো মোল্লাহাট বাজারের অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে!। অব্যাহত ভাঙনের ফলে মধুমতি নদীর গাড়ফা, গিরিশ নগর, ও আস্তাইল এলাকার অন্তত ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার তীর প্রবল ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে।
গাড়ফা এলাকার মর্জিনা বেগম জানান, আমাদের বাড়ির সামনের পাঁকা রাস্তা ভেঙ্গে মধুমতি নদীতে চলে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন যাবত ভাঙ্গন বেশী দেখা দিয়েছে। এভাবে রাত-দিন ভাংতে থাকলে আমাদের ঘরবাড়ি সব মধুমতি নদীতে বিলিন হয়ে যাবে। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যাবস্থা নেওয়া এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মান এর পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে তিনি।
একই এলাকার সিয়াম জানান, মধুমতি নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে রাতে ঘুম হয়না সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকি এই বুঝি বাড়ি ঘর সব নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেল। একটু একটু করে ভাংতে ভাংতে পাঁকা রাস্তাসহ গাছপালা নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন যেকোন সময় আমাদের বাড়িঘরসহ আশ পাশের বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।
উদয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান এসকে হায়দার মামুন জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত মধুমতি নদীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে আমরা কাঠ/বাঁশ দিয়ে ভাঙ্গন মোকাবেলায় প্রচেষ্টা চালিয়েছি, তাও ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এভাবে ভাংতে থাকলে মোল্লাহাট শহর রাক্ষাবাঁধ, গিরিশ নগর, ও আস্তাইল এলাকার বসত-বাড়ি ও রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। তাই ভাঙ্গন রোধে তিনি দ্রুত নদী শাসন ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস সরকার জানান, মধুমতি নদীর ৩ হাজার ৪০০ মিটার এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ডিপিপি প্রস্তুত করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন পেলে খুব দ্রুত স্থায়ীভাবে নদী শাসন কাজ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদ হোসেন বলেন, মোল্লাহাটে মধুমতি নদীর ভাঙ্গনে বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।
পত্রিকা৭১/সৌরভ কুৃমার।