তওবা করলে কি হারাম সম্পদ হালাল হয়ে যাবে?

ধর্ম ডেস্ক

ধর্ম ডেস্ক

৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ সপ্তাহ আগে

তওবা করলে কি হারাম সম্পদ হালাল হয়ে যাবে?

বুঝে বা না-জেনে অনেকেই হারাম উপায়ে সম্পদ উপার্জন করে ফেলেন। পরে যখন ভুল বুঝতে পারেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে—তওবা করলে কি সেই হারাম সম্পদ হালাল হয়ে যায়? নাকি হারামভাবে অর্জিত সম্পদ থেকে মুক্তির জন্য আলাদা করণীয় আছে? ইসলামের নির্দেশনা এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট।

হারাম পন্থায় উপার্জনের পর যখন কেউ অনুশোচনা করে তওবা করে, তখন প্রথম দায়িত্ব হলো—যার সম্পদ অন্যায়ভাবে নেওয়া হয়েছে তাকে ফেরত দেওয়া। যেমন ঘুষ, সুদ, চুরি, প্রতারণা, জুলুম বা যৌতুক—এসব যার কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে, তাকেই তা ফেরত দিতে হবে। প্রকৃত মালিককে ফেরত না দিয়ে শুধু তওবা করলে সেই সম্পদ কখনো হালাল হবে না, বরং গুনাহও মাফ হবে না।

আর যদি ফেরত দেওয়ার সুযোগ না থাকে—যেমন মালিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না—তাহলে সেই সম্পদ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করতে হবে। কারণ সম্পদের মালিক যেহেতু সে নয়, তাই এ সম্পদ দান করে সওয়াব অর্জনের ইচ্ছা করাও বৈধ নয়।

হালাল উপার্জনের গুরুত্ব

ইসলাম সবসময় হালাল-হারামের ব্যাপারে কঠোর সতর্ক করেছে। হারাম উপার্জনে বরকত নষ্ট হয়ে যায়, এমনকি ব্যক্তির পুরো জীবন অশান্তিতে ডুবে থাকে। যার আয় হারাম, তার খাবার, পোশাক, চলাফেরা—সবকিছুতেই হারামের প্রভাব পড়ে। এমনকি তার সন্তানের শরীরও গড়ে ওঠে হারাম খাবারে। ফলে সম্পদ যতই থাকুক, জীবনে শান্তি ও বরকত থাকে না; আল্লাহর রহমত থেকেও দূরে থাকতে হয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—“যে ব্যক্তি হালাল পথে উপার্জন করে, তার সম্পদে বরকত দেয়া হয়।”(মুসলিম, হাদিস ২৩১১)

আরেক হাদিসে তিনি বলেন—“হালাল রুজির চেষ্টা করা অন্য ফরজ কাজগুলোর মতোই একটি ফরজ।”(বায়হাকী, হাদিস ৪৬০)

নিজ হাতে উপার্জনের ফজিলত সম্পর্কেও রাসুল (সা.) বলেন—“নিজ হাতে উপার্জিত খাবারের চেয়ে উত্তম কোনো খাবার নেই। দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন।”(বুখারি, হাদিস ২০৭২)

ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল উপার্জন শুধু জীবিকা নয়, বরং ইবাদতের অংশ। আর হারাম সম্পদ কখনোই তওবার মাধ্যমে হালাল হয়ে যায় না—বরং সংশোধনের প্রকৃত পথ হলো ফেরত দেওয়া, আর ফেরত দেওয়া সম্ভব না হলে নিষ্কলুষ নিয়তে দান করে দেওয়া।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news