নামাজের প্রতিটি রাকাতে সিজদা ফরজ, এবং সুন্নাহ অনুযায়ী সিজদা করতে হয় সরাসরি কপাল মাটিতে রেখে। মূল বিধান হলো—টুপি, পাগড়ি বা কোনো কাপড়ের প্যাচের ওপর সিজদা করা উচিত নয়। কারণ এতে কপাল সরাসরি জমিনে স্পর্শ করে না, যা সুন্নাহর বিরুদ্ধে গণ্য হয়।
তবে যদি টুপি বা পাগড়ির অংশ এত পাতলা হয় যে সিজদার সময় কপাল তার ভেতর দিয়ে মাটিতে চাপ অনুভব করে—অর্থাৎ কপাল-জমিনের সংযোগ কার্যত বজায় থাকে—তাহলে নামাজ হয়ে যাবে, কিন্তু এটি মাকরুহ হিসেবে বিবেচিত হবে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা বা প্রচণ্ড গরমের কারণে যদি কপাল জমিনে রাখা কষ্টকর হয়ে যায়—এক্ষেত্রে কাপড়ের ওপর সিজদা করা বৈধ গণ্য হয়; কারণ এটি শারীরিক অপারগতার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে, যেমন বিশেষ ধরনের টুপি বা মোটা পাগড়ি পরে সিজদা করা—এটি অপারগতা নয় এবং এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-ও পাগড়ির প্যাচের ওপর সিজদা করা অপছন্দ করতেন। (আল আওসাত ৩/৩৪৩)
নামাজে সিজদার ফজিলত
সিজদা আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। হাদিসে সিজদার অপরিসীম ফজিলত পাওয়া যায়।
এক হাদিসে সাওবান (রা.)–কে একজন ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন—কী করলে জান্নাত লাভ হবে?
তিনি কিছুক্ষণ নিরব থাকলেন, তারপর বললেন—“অধিক পরিমাণে সিজদা করো। তোমার প্রতিটি সিজদার বদলে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং একটি গুনাহ মাফ করবেন।”
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৮৬)
আরেক হাদিসে রবীআ ইবনে কাব (রা.) নবীজি (সা.)-এর কাছে জান্নাতে তাঁর সঙ্গ চাইলেন।
রাসুল (সা.) বললেন—“তাহলে অধিক সিজদার মাধ্যমে তুমি নিজের জন্য সাহায্য করো।”(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৮৭)
আরও এক বর্ণনায় এসেছে—“যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে, আল্লাহ তার জন্য একটি নেকি লেখেন, একটি পাপ মুছে দেন এবং তার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করেন।”(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪২৪)

